বিজয়ের কবিতা
লাল সবুজের পতাকা
__ওমর ফারুক কাজল
শোষণ বঞ্চনা
বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চ
বজ্রকন্ঠ
ইস্পাত কঠিন শপৎ
উদাত্ত আহ্বান
উম্মাতাল ৭১
মুক্তিযুদ্ধ...
শকুণের আঁচড়ে
মা বোনের রক্তাক্ত আঁচল
তাজা রক্তের নদী
বেসুমার লাশের বুক ছিঁড়ে
বিজয়ের সবুজ মুকুল
মানচিত্রে হাসে
লাল সবুজের পতাকা...
বিজয় দেখেছি
__কামরান চৌধুরী
বিজয় দেখেছি ভোরের আলো মাটি ছোঁয়ার সুগন্ধে
আজান কিংবা শঙ্খ ধ্বনিতে, নীরব প্রার্থনা সঙ্গীতে
বিজয় দেখেছি শহরে গ্রামে, পথে প্রান্তরে রেস্তোরাতে
লাউয়ের ডগায়, আমলকী বন, বাঁশঝাড়ে শর্ষেক্ষেতে।
বিজয় দেখেছি চঞ্চল শিশুর হাত-পা ছোড়ার ছন্দে
বিজয় দেখেছি দুরন্ত কিশোরের মহা মুক্তির আনন্দে।
বিজয় দেখেছি যুবক-যুবতির প্রণয় উচ্ছ্বল দেহমনে
বিজয় দেখেছি বাবা-মার মমতাময় বাহুতে গৃহকোণে।
বিজয় দেখেছি ফসলের মাঠে হাতেহাতে কাস্তে লাঙলে
বিজয় দেখেছি ভরা নদীর জোয়ার ভাটার ছন্দ তালে।
বিজয় দেখেছি নৌকার ধূসর পালে দিগন্তের আভায়
বিজয় দেখেছি অরণ্য কাননে পাখিদের কলতান সভায়।
বিজয় দেখেছি সবুজে লালে, পতাকায় উর্দ্ধ শিরে,
বিজয় দেখেছি নেতার মুখে, কী অদ্ভূত অহংকারে।
বিজয় দেখেছি প্রিয় চোখের হাসিতে উজ্জ্বল মণিতে
নদীর বুকেতে আঁকা আকাশ মেঘের আল্পনা তুলিতে।
বিজয় দেখেছি অনাহার ক্লিষ্ট মুখের অলিতে গলিতে
শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা, শরত-হেমন্তে, মধু বসন্ত সমীরণে,
বিজয় দেখেছি মিছিলে স্লোগানে রাজপথে পায়েপায়ে,
বিজয় দেখেছি মৌনতায় সন্ধ্যারাতে শিউলিপ্রাতে।
বিজয় দেখেছি গৃহে, শিক্ষালয়ে, কর্মালয়ে, ধর্মালয়ে
হাসিখুশি প্রাণে অনন্ত গানে, দুরন্ত নৃত্য বানে।
বিজয় দেখেছি মায়ের আঁচলে, গায়ের বধুর নোলকে
আলতা পায়ে মেহেদী রাঙা হাতে, নববধুর সাজে।
বিজয় দেখেছি দুঃখিনীর নয়নের জলে, দীর্ঘশ্বাসে
বিজয় দেখেছি এই বাংলার ধুলি, জলে, শ্বাস-প্রশ্বাসে।
বারবার যেন বিজয়ী হয়েই ফিরে আসি এইখানে
অমৃতের স্বাদ নিতে, প্রিয়তমার বাহুতে আলিঙ্গনে।
বিজয়
__আবুল কালাম আজাদ
বিজয়! আঙুলে মেহেদি বুকে কিংশুক,
লাশের পাড়ায় মৃতদের ঘুম,
পড়ে থাকে সুখ-দুখ।
বাংলাদেশ জাগে বারুদে মেশিনগানে
এই বাংলার মানুষ জাগতে জানে
আকাশের মিতা সূর্য কে তারা আনে
ভোরের পাখির হৃৎ সাহসের টানে।
বিজয় আমার মায়ের বসন সহসাই করে সাদা
লাল পিরহানে বাবার বুক রক্তে ভিজে কাদা।
বিজয়কেতন পতপত উড়ে ষোলই ডিসেম্বর
মনেপড়ে হারানো মুখ ছায়াছবি বারবার।
মুক্তিযোদ্ধার চিতাবহ্নি নয়ন রণাঙ্গনের
সাহস যোগায় আজো জনপদে বিষন্ন সব মনের।
তোর রক্তঋণে
__এবিএম মাহবুবুল ইসলাম
তোর কুয়াশামাখা নরম আদর
লেগে আছে দেখ
কোমল পলির দ্রাবিড়ভূমি
এ বাংলার সবুজ জমিনের বুকে।
তোর নরম রোদের ছোঁয়ায়
শত কামনায় ভালোবাসা
আজও জেগে থাকে।
মুক্তির ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে
আমার সোনার বাংলার বিজয়ের চোখে।
তোর শহিদী রক্তের ঋণে
স্মৃতির মিনার হতে
সুখের আনন্দাশ্রুু কুয়াশায় ঝরে,
বিজয়ের এই শুভক্ষণে।
বিজয় মানে বাংলাদেশ
__শামীম রায়হান
বিজয় মানে কথা রাখার শপথ
বিজয় মানে হাতে ধরে চলার পথ,
বিজয় মানে মাকে দেয়া কথা রাখার জীবন
বিজয় মানে বোনের স্বপ্ন সুখের অঙ্গন,
বিজয় মানে প্রেমিকার মুক্ত হাসি
বিজয় মানে বধূর সংসারের খুশি।
বিজয় মানে পথিকের পথচলা নিরাপদ
বিজয় মানে কৃষক আর শ্রমিকের মজবুত হতে গড়া জনপদ,
বিজয় মানে ধণী গরিব ব্যবধানহীন দেশ
বিজয় মানে জনতার হাতে ক্ষমতা প্রবেশ,
বিজয় মানে মুক্তচিন্তা আর ধর্মের স্বাধীনতার ঘোষনা
বিজয় মানে মুক্তিযোদ্ধা মহা-বীর ঐক্যের চেতনা।
বিজয় মানে গ্রামের পর গ্রাম সবুজের মেলা
বিজয় মানে নগর মহানগরের উন্নয়নের ভেলা,
বিজয় মানে ফসল ভরা মাঠ আর মুক্ত প্রকাশ
বিজয় মানে কলকারখানা আর মুক্ত আকাশ,
বিজয় মানে ৭১ এর জাগরণ লাল-সবুজ পতাকা
বিজয় মানে বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে রক্ত দিয়ে আঁকা।
আমি আমার কথা বলতে চাই
__ড. মুতাকাব্বির মাসুদ
__ড. মুতাকাব্বির মাসুদ
শাহবাগের মোড়ে প্রথম দেখা
সেদিন বিকেলে টিএসসির উঠোনে
নান্দনিক তারুণ্যের ভিড়ে তুমি
আমি তোমায় দেখেছি; তুমি জানলে না
আবারো দেখা নাট্যসন্ধ্যায়
গাইড হাউসের প্রজাপতি লনে
লালটিপ কপালে,সবুজ কামিজে
এমোন তারুণ্যের উচ্ছ্বাস ভরা বিকেলে
চোখে পড়ো কেনো?
---
এবার বয়স তিরিশের কথা বলে দেবো আমি
তুমি তরুণ সন্ধ্যার মেরুন চাদরে
অচঞ্চল উদাস
মনে হলো বীরাঙ্গনা চাদরে
'কোকিলারা' তুমি উদ্দাম উচ্ছল
আবার কিছুটা অচপল, স্থির
যেনো 'শবমেহের'
আমি পদাতিক আরণ্যক
----
বুকের ভেতর ডিনামাইট, উড়িয়ে দেবো
নির্বাক দেয়াল
আমি আমার কথা বলতে চাই
খেয়াল করোনি তুমি
জয়বাংলা রক্ত শিরায় শিরায়
টগবগিয়ে ওঠে
আমার প্রেমের বিদ্রোহী সূর্য উঠবেই
তোমার কালোশশী চুলের ফাঁকে
মাথার উপর মেধাবী কাক
টেলিফোনের তারে
শব্দ শুনে চোখ তুলে তাকালে এই প্রথম
বুঝিনি কাকে দেখলে তুমি !
কাক নকি আমি?
----
আমি দেখেছি দীর্ঘ নয়মাস পর
তোমার আনত সলাজ চোখে
আমার সোনার বাংলা
দেখেছি ধানশালিকের মুক্ত স্বাধীন উড়াল
বাচ্চা শিশুর নাটাই হাতে উড়াল ঘুড়ির ছন্দ
দেখেছি সুন্দরবনের মায়া হরিণের নৃত্য
দেখেছি আমার প্রেমের রাজপথ
মিছিলে মিছিলে মুখরিত
সবুজ কলাপাতায় রক্তসিঁদুরের ফোঁটা
রেখেছো উঁচিয়ে লাখো জনতার ভিড়ে
পদ্মা, মেঘনা, যমুনার তীরে
তোমার চোখেই দেখেছিলাম
সাম্রাজ্যবাদের কবর
খোঁজেছিলাম আমার স্বাধীনতা
কথা বললেনা একবারো!
বারুদের গন্ধে তোমার শরীরের গন্ধ খুঁজি
কাক দু'টো উড়াল খেলে
জমির আলির বাঁশঝাড়ে।
----
তোমার জন্য ঢাকায় ফেরা
বেইলি রোড, ফাস্টফুডের দোকান
তোমার খোঁপায় বেলিফুল
সাপুড়ে সন্ধ্যা, ভালবাসার উঁচু দালান
তোমার পাশে সোনালি কবিতার ভিড়
মাঝে মাঝে সবাক তারুণ্যের ঠোঁটে
মেধাবী সিগারেট
তুমি কালোতিষিচুলে শ্যাম্পু করা
ঠোঁটে লাল চন্দনীর হাওয়া
নিয়নের আলোয় ঝলমলে চোখ
দিনের শেষে ক্লান্ত ময়ূরী তুমি
সমসার রুগ্ন কোণে বিলাসী চুম্বন
পটেটো চিপসের মর্মরে ঠোঁট
গোলাপি লিপস্টিকের আহ্লাদী ছোঁয়া
ঘাই খেলে আমার বয়সের রক্তজলে
জলকমলের মতো দেবকন্যা তুমি
সাদা জলের নূপুর পায়
আমার অন্তর দেহুড়ীতে রেখেছো পা
আমার ভেতর যে বিষুববৃত্ত
তোমার দূরত্ব আপাত কমেনি কিছু
তবুও অন্তরগহনে ভিসুুবিয়াসের দহনজ্বালা
----
আমি তন্ময়, আমি নির্বাক
চেয়ে দেখি কফি মগের সাম্রাজ্যবাদী ঠোঁটে
তোমার নবীন গণতান্ত্রিক চুম্বন
আড়মোড়া ভেঙ্গে ময়ূরী ঢঙ্গে যাচ্ছো তুমি
তখনো কিছুই হয়নি বলা!
আমি নির্বাক, আমি স্তব্ধ অরণ্য
একাকী দাঁড়িয়ে...
বেইলি রোডে, গলির ধারে
মাথার উপর মেধাবী কাক
তখনো টেলিফোনের তারে
----
সেদিনের পর আজও খুঁজি তোমায়
দূরে কোথাও...
শহর থেকে গ্রামে,উজান গাঙ্গে
ভাওয়াইয়ার সুরে
চাঁদনি রাতে কদমের তলে
----
আজ ছেচল্লিশ বছর পর
আমার বয়সের ঘরে তোমার ছবি
মন চায় যখন খুলে দেখি
সেই তুমি বনফুলের নাকফুল
ঠোঁটের ভাঁজে নবান্নের হাসি
সবুজ ধানের ডগার মতো চিত্রার্পিত দেহ
সারা দেহে পদ্মার ঢেউ
ইলশে ঠোঁটের মায়া খেলে
তোমার ঠোঁটের বাঁকে
তুমি কী কখনো পড়েছিলে প্রেমে?
বিজয়ের কথা বলো
__সাবিরা বেগম ডলি
এই কি সেই বিজয়?
যে বিজয় কেড়ে নিয়েছে লাখো জীবনের সুখ,
এই বিজয় কি সেই-
যে বিজয়ে শত কুমারীর অনাকাঙ্ক্ষিত মাতৃত্বের স্বাদ প্রাপ্তি-
সেই বিজয় দিন কি ষোলই ডিসেম্বর?
যেদিন কত শত মায়েদের নাড়ী ছেঁড়া ধন হারিয়েছে প্রাণ,
হারিয়েছে সন্তানের বাবা ডাকার একটু সুযোগ।
তবে কোন বিজয়ের কথা বলবে?
স্বাধীনতার পতাকা হাতে নিয়ে রক্তের নদী পাড়ি দেয়া, নির্ভীক চিত্তের এক দল দামাল ছেলের কথা?
যে দেশে কৃষাণ-কৃষাণীর ঘুম ভাঙে ভোরের দোয়েলের শিস শুনে?
তবে বলো, সেই বিজয়ের কথা-
যে বিজয় দিয়েছে একটি স্বাধীন ভূমি,
দিয়েছে স্বাধীনতার সুখ,
দিয়েছে তোমার আমার ভালবাসার অবাধ এক মিলন কেন্দ্র,
আর দিয়েছে কথা বলার অদম্য, অপূরণীয় ইচ্ছেগুলোর অবাধ সুযোগ।
এটাই তো তোমার আমার ভালবাসার বিজয়।
একটি স্বপ্নের ব্যবচ্ছেদ
__সালমা জেবীন চন্দ্রিকা
তখনও আমার হাতে মেহেদির রং
খোঁপায় ফুল হলুদ বরণ;
স্বপ্নের নদীতে নীল নীল ঢেউ।
মুক্তির মন্ত্রে যুদ্ধ এলো
তুমি যোদ্ধা হলে;
যাবার বেলায় চোখে ঢেলে চোখ বললে
-বউ যুদ্ধে যাচ্ছি,
সজীব রাখতে তোমার কপালের টিপ
হাতের চুড়ি, চোখের কাজল;
জন্মভূমি জননীর সম্ভ্রম।
ফিরিয়ে আনবো শিশুর হাসি,
মায়ের খুশি, বোনের নোলক,
পথের গতি, নদীর স্রোত।
মুক্তি এলো, গান এলো
উড়লো পতাকা লাল সবুজের;
তুমিই শুধু ঘুমিয়ে রইলে দিঘির পাড়ে
মাটির পালংকে দূর্বাঘাসের চাদর গায়ে।
এখন আমার সাদা বসন
বুকের মাঝে কালো রাত্রি বয়ে চলছি
অনেক বছর;
এদিক ওদিক কিছু বলার ডাক পড়ে আজ!
তোমাদের কি স্বপ্ন ছিল বলি আমি--
গোলায় ধান,গোয়ালে গরু,পুকুরে মাছ,
এমন এক সোনার বাংলার।
নির্ভয়ে নারী যাবে নদীর ঘাটে
লেবুর গন্ধমেখে জোছনা বিলাবে চাঁদ।
কৃষকের হাঁড়িতে সুখ ঘুমাবে
শ্রমিকের ঘরে বাজবে আনন্দের শাঁখ।
এখন তোমাদের স্বপ্ন যেন বিসুভিয়াস
নিজেদের রক্ত আমরা নিজেরাই করি পান;
অনৈক্যের দাবানলে পুড়ে যাচ্ছে সবুজ দেশ।
আবার জাগো সবে
হাতে রাখ হাত;
দেশ কল্যাণে পথ চল একসাথ।
বিজয় মানে
__বিপুল চন্দ
বিজয় মানে
স্বপ্ন ছোঁয়া নতুন সূর্যোদয়,
বিজয় মানে
মগ্ন প্রেমিক স্বাধীন গল্পময়।
বিজয় মানে
মুষ্টি হাতে সাহসী শক্ত ভীত,
বিজয় মানে
সৃষ্টি নেশা প্রত্যয়ী অভিজিৎ।
স্বদেশের প্রতিকৃতি
__হাসিদা মুন
গণতন্ত্র এখন-শতাব্দীর পাকানো ফাঁদ
মাকাল ফলের আকৃতি
আঁকারে প্রকার ভরা এক-স্বার্থ চুক্তি
অন্যান্য জরিপে দেখায় স্বজন প্রীতি
সহানুভূতি সহযোগিতার পরিবেশ নেই
পতাকা তলে আছড়ে পড়ে-স্বাধিকার বল
বাড়ছে হাইওয়ে, সুউচ্চ ভবন, উড়ান সেতু শপিং মল
শান্তিপূর্ণভাবে দালালেরা এঁটে ওঠে সীল গালায়
খুনী পূজারী হয়ে আমরাই থেকে যাই
স্বাধীনতার দুর্ভিক্ষ নামে, 'দেশদ্রোহী নামা'য়
হাড্ডি মাংস গিগাবাইট-মেগাবাইটে গিলছে
গ্লোবালাইজেশানে গলে যাওয়া পৃথিবী যদিও সত্যতে সোচ্চার
কিছু বলতে গেলে নেমে আসে জংধরা হাতে চাপাতি
মূর্তির গড়নে নিথর দাঁড়ানো মানচিত্রে-
স্বদেশের প্রতিকৃতি...
যে বিজয় আমাকে কাঁদায়
__সাফিয়া খন্দকার রেখা
বিজয় দেখেছো তুমি? আচ্ছা বলোতো
বিজয়ের রং কেমন?
লাল আর সবুজ
আমার আঙিনার সবুজ ঘাস,আর মায়ের কপালের লাল টিপ।
বাহ! খুব সুন্দর তোমার বিজয়ের রং
'লাল সবুজ'
তুমি কি বিজয় দেখোনি এখনো!
হ্যাঁ দেখেছি অনেকবার দেখেছি,বহুবার দেখেছি,
বাহান্নতে দেখেছি, একাত্তরে দেখেছি,
আরও এক রক্তস্নাত বিজয় দেখেছি বত্রিশ নম্বর
বাড়িটিতে সেই পঁচাত্তরে,
হায়রে আমার বিজয়!
তবেতো তোমার বিজয় কেবলই রক্তজবা,
না না আমি রক্তের কথা শুনতে চাই না,
তোমাকে চলো আমার আমার বিজয়ের কাছে নিয়ে যাই-
চলো আমি তোমার বিজয়ের পথ দেখবো।
এই যে দেখো আটষট্টি হাজার গ্রামের সোনালী ধান,
এই দেখো পাট খেতের হাওয়ার নাচন,
ঐ যে দেখো
দেখো কুয়াশার চাদরে ঢাকা শীতের সকাল-
ভাপা, পুলি, চিতই-
খুব ভালো লাগছে তোমার বিজয় দেখতে
মনে হচ্ছে যেনো জয়নুল আবেদীনের চিত্রকর্ম দেখছি।
চলো আমার বিজয় দেখবে-
দেখো এই যে সিঁড়িতে রক্তের দাগ, এই যে এখনো পড়ে আছে কালো পাইপ,
রক্তাক্ত সাদা পাঞ্জাবী-
দেখো সারাবাংলার আকাশ বাতাসে গুমরে
গুমরে কান্নার প্রতিধ্বনি,
শুনতে পাচ্ছো ওরা কি বলছে?
ওরা বলছে কেন এমন করলে তোমরা??
চুপ, চুপ করো
তোমার বিজয় কেবলই কষ্ট, এ কষ্ট আমি
আর চাইনা।
মায়ের মুখে এ কষ্ট দেখি- বাবার যুদ্ধে যেয়ে
না ফেরার কষ্ট।
দেখো
দেখো এই যে রূপালী ইলিশ ঐ যে নীল দিগন্ত
যেখানে আকাশ মাটিতে মিশেছে,
সীমাহীন সবুজ আর সবুজ-
দেখো হেমন্ত এসেছে নবান্নের ঘ্রাণ পাওনা তুমি?
তোমার বিজয়ের কথা আমি শুনবো না,
আমি আর কাঁদতে চাইনা-
কাঁদতে হবে তোমাকে, বারবার কাঁদতে হবে
না হলে কি করে পাবে তুমি বিজয়ের স্বাদ?
এসো কাঁদি বধ্যভূমিতে দাঁড়িয়ে,
এসো কাঁদি নুর হোসেনের জন্য,
এসো কাঁদি তারামনদের জন্য,
এসো কাঁদি অগণিত শহীদের রক্তের নদী ছুঁয়ে
আর ভালোবাসি সেই মানুষটিকে যিনি
আমাদের দিয়ে গেছেন একখণ্ড ভূমি,
একটি পতাকা, বুক ভরে নিঃশ্বাস নেয়ার স্বাধীনতা,
তাইতো আজ এখানে দাঁড়িয়ে বলছি আমরা
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি-
পদ্ম, প্রিয়তমা আমার
__জোছনা মাহমুদ
লাল সবুজে তোমাকে সেইদিন দারুন লাগছিল-
সেই দিনের সন্ধ্যা বেলায়, দাদুদের পুকুর পাড়ের বেল তলায়-
এক পলক তোমাকে দেখেছিলাম-
রেশম কালো কেশ্ তোমার-
গালে পড়া টোল-
দূধে-আলতায় মাখা গায়ের রঙ-
বাহ্,অসাধরণ পল্লীবালা তুমি।
তখন থেকে মনের ডাইরীতে, লিখেছি তোমাকে নিয়ে কত কবিতা, গল্প।
চলে গেলাম স্বাধীনতার যুদ্ধে--
যতবার শত্রুদের উপর ঝাপিয়ে পড়ি-
ততবার আমার পদ্মের মুখমণ্ডল ভেঁসে উটে-
আমার পদ্ম কে স্বাধীন দেশ দেব-
আমার পদ্ম হাঁসবে, খেলবে, গাইবে-
যুদ্ধ শেষে পিরে এসে, দেখি-
দাদূদের পুকুর পাড়ে বেল তলায়-
পদ্ম আর আসে না।
মা, পদ্ম-----?
মায়ের মুখে শুনেছি পদ্ম আর নেই-
হানাদার, দানবের দল-
বুলেটের আঘাতে আমার পদ্ম কে রক্তাত করেছে
আহা
কয়টা বুলেট তোমার বুকে লেগেছিল-
তুমি কেমন ছিলে তখন?
ওই দানবের দল তোমার সম্ভ্রাম্য যদি কেড়ে নিত তখন কি হতো
কত শত প্রশ্ন এখনো আমাকে গিলে খায়-
মাতৃক ভাষার দাবীতে-
আন্দোলন করেছিলাম-
আমরা তা পেয়েছি ও--
পদ্ম, ইচ্ছে ছিল তোমার সাথে, মায়ের ভাষায় প্রান খুলে কথা বলবো-
তোমাকে নিয়ে বাংলার মাটিতে স্বাধীন ভাবে-
প্রজাপতির মত ডাঁনা মেলে উঁড়বো-
তা আর হলো না।
পদ্ম, এখনো লাল- সবুজ দেখলে -
আমি পাগল হয়ে যায়।
তুমি শুধু আমার মনে নই-
তুমি মিশে আছো এই সবুজে-
এই বাংলার অলি-গলি, মাঠে-আকাশে-
তুমি আছো
তুমি থাকবে।
পদ্ম আর আসে না।
মা, পদ্ম-----?
মায়ের মুখে শুনেছি পদ্ম আর নেই-
হানাদার, দানবের দল-
বুলেটের আঘাতে আমার পদ্ম কে রক্তাত করেছে
আহা
কয়টা বুলেট তোমার বুকে লেগেছিল-
তুমি কেমন ছিলে তখন?
ওই দানবের দল তোমার সম্ভ্রাম্য যদি কেড়ে নিত তখন কি হতো
কত শত প্রশ্ন এখনো আমাকে গিলে খায়-
মাতৃক ভাষার দাবীতে-
আন্দোলন করেছিলাম-
আমরা তা পেয়েছি ও--
পদ্ম, ইচ্ছে ছিল তোমার সাথে, মায়ের ভাষায় প্রান খুলে কথা বলবো-
তোমাকে নিয়ে বাংলার মাটিতে স্বাধীন ভাবে-
প্রজাপতির মত ডাঁনা মেলে উঁড়বো-
তা আর হলো না।
পদ্ম, এখনো লাল- সবুজ দেখলে -
আমি পাগল হয়ে যায়।
তুমি শুধু আমার মনে নই-
তুমি মিশে আছো এই সবুজে-
এই বাংলার অলি-গলি, মাঠে-আকাশে-
তুমি আছো
তুমি থাকবে।
সত্য শোনো মাগো
__আব্দুল্লাহ আল মুহীত
মাগো খুব শান্তিতে আছো জানি ওখানে
মাটির ঘরে নাতিশীতোষ্ণ স্বর্গ সোপানে।
তুমি চলে গেছো ভালো করেছো সত্যি
এখানে অমানুষের দলেভারী
মন বিবেক আর মনুষ্যত্ব নাই এক রত্তি।
আমাদের দেশে আমরা চোর সবাই তাই
ঘরের শত্রু বিভীষণ লুটে খায়
দেশের টাকার দেখভাল করে বিদেশীরাই।
সেই-ই রাজকোষও হরি-লুট হয় বাতাসে
বড় চোর বলে কি আর হয়েছে
রক্ষক-হাত ভক্ষক হয় মায়া কান্না কাঁদে সে।
স্বাধীনতা অর্জনে সহযোগীতাকারী ভগ্নি
ওড়না উড়িয়ে আঁকায় গন্ডি
চৈত্রমাসে খরায় শুকায় বর্ষায় জল লগ্নি।
এখানে সরকারের অনেকে ইয়াবার দালাল
শিক্ষালয়ে মাদকে সমতাল
বিরোধীরা অনেকে মদ-গাঁজায় মালামাল।
এখানে নেশার যোগানে পেশাজীবী মহল
সাদার আড়ালে কালোয় সচল
গাড়ী ভর্তি টাকার বস্তা মন্ত্রী হাস্যোজ্জ্বল।
জন্মদাতাকে কুপিয়ে জননীকে করে জবাই
ভাই-বোনও বাদ যায় না তাই
বাবা-মা তবে কেন কম র'বে ওরাও কসাই।
মাগো তুমি দেখছো বোধহয় সবই এখানের
বিনা-পুঁজি ব্যবসায় শরীরের
মালিকেরা বেশী সুন্দর সুস্থ বিক্রয়ী দোকানের।
স্বামী বালিশচাপায় দম বন্ধে মারে স্ত্রীকে
যুবক এসিড ছুঁড়ে যুবতীকে
বধুয়া হাতে গলাকাটা লাশ হয় বর পলকে।
মাগো জনগণ জানে পাঁচ বছরের পালাবদল
গদিধারী বলে কুড়ি অন্তর
অন্য জিহ্বা লালায়িত সংসদ যেন শপিংমল।
সিঁধেল চোর মেম্বর প্রার্থী সাদা জামা গায়ে
গোয়ালঘরের ব্যাভিচারিনী যে
সেও প্রার্থক পদের গরুচোরেও নেতা রায়ে।
আমিই মাত্র বড্ড বেমানান এই দুনিয়ার দোলে
মাগো তুমি কোথায় নাও ডেকে তোমার কোলে।
বিনম্র শ্রদ্ধার অভিবাদন
__তাসরিন প্রধান
অবরুদ্ধ কারা প্রাচীর ভেঙেছে
ওরা দৃঢ় হাতে
প্রতারকদের মিথ্যে অহমিকা
দলিত তাদের দৃপ্ত পদভারে
আজ ওরা আসবে নগ্ন পায়ে,
আদুল গায়ে
ছায়া ছায়া নয়, সূর্যের মতো সূর্যের সাথে
হে আমার জননীর সাহসী ছেলেরা
তোমাদের অবদানে পেয়েছি
প্রিয় বাংলাদেশ
তাই তোমাদের স্মরণ করি সতত
তোমরা লও আমার
বিনম্র শ্রদ্ধার অভিবাদন।
বিজয় দিবস
__শিউলী জাহান
আজ ভোরের চাদরে
শুধু না হয় দেখি বিজয়ের অকপট হাসি,
চোখের ঝিলিকে প্রফুল্ল আকাশে
অনেক অপ্রাপ্তিতেও ভীষণ কিছু প্রাপ্তি;
সব অশ্রু ছাপিয়ে স্বাধীন অস্তিত্বের প্রাপ্তি;
পরজীবীর বর্ম ছিঁড়ে মাতৃভূমির প্রাপ্তি;
আজ না হয় শুধু পাওয়ার আনন্দেই হোক
কিছু অশ্রুপাত; সূর্য আদরে প্রাপ্তির আনন্দ মিছিল;
স্মৃতির পাতায় ওড়ে যাক আকন্ঠ দীর্ঘশ্বাস;
আজ না হয় বাংলাদেশের পীচ ঢালা পথ, মেঠো পথ
প্রান্তর থেকে প্রান্তর, পূর্ব থেকে পশ্চিম
উত্তর থেকে দক্ষিণ, দিগন্ত থেকে দিগন্ত
শুধু মুখরিত হোক, প্রতিধ্বনিত হোক
স্বাধীন মানুষের বিজয়ের উচ্ছ্বাস!
বাংলাদেশ; অভ্যুদয় মহান বিজয়ে
__কাজী আতীক
অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই ছিলো- মহান, জয়ী হলাম যদিও
নাকাল সম্ভ্রম নিযুত, সাগর রক্ত ঝরিয়ে বুকের।
যেমন কৃষকের মরণপণ ইচ্ছে থাকে নির্বিঘ্ন ফসলের,
অথচ ফসল তোলার মৌসুমেই শুরু হয় বাধা বিঘ্ন,
যেমন ধাপে ধাপে রোপণ করা আমাদের ফসলের মাঠ
ভরা মৌসুমে ওরা বিষাক্ত পঙ্গপাল-
উড়ে এসে জেঁকে বসে, নিধন যজ্ঞ চালায়
বিদ্বেষে জঘন্য, উজাড় হয় ফসলের মাঠ।
হোক পোড়ামাটি তবু অধিকারে রাখা ছিলো লক্ষ্য তাদের,
ওরা নরক নামিয়ে আনে ভূপৃষ্ঠে- আমাদের দেশমাতৃকার।
আমরা দুরন্ত সাহসে তাদের- ফিরিয়ে দিয়েছি নরক,
ন'মাসের প্রসব কষ্টের পর যেমন মায়ের গর্বিত হাসি
যেমন ভূমিষ্ঠ শিশুটির কান্না এক অনন্য সুখের বার্তা।
আমাদেরও অজস্র কান্না ছিলো ন'মাস কিংবা পরেও-
যেহেতু আমদের ইচ্ছেয় দৃঢ়তা ছিলো পৌঁছানো লক্ষ্যে
তাই আনন্দ বার্তাটি তিরী হয় অচিরেই- বাংলাদেশ;
অভ্যুদয় পৃথিবীর মানচিত্রে- আমাদের মহান বিজয়ে।
বিজয়
__একেএম মিজানুর রহমান
বিজয় মানে দুহাত তুলে মুক্ত মোনাজাত
বিজয় মানে সান্ধ্যপ্রদীপ তুলসি ধোয়া হাত।
বিজয় আমার যাত্রাপালা লালন সিরাজ সাঁই
বিজয় 'আমার সোনার বাংলা' পরান খুলে গাই,
বিজয় আমার কালবোশেখীর সবুজ সোনার গাঁ
বিজয় আমার পিতার গন্ধ বিজয় আমার মা।
স্বাধীনতা মানে
__আফরোজা জেসমীন মায়া
স্বাধীনতা মানে পতাকার জমিনে
লাল সূর্য,
অবারিত সবুজ-যুবকের হাতে
রণতূর্য।
স্বাধীনতা মানে কিশোরীর
স্বপ্নচোখের রঙিন আশা,
ভাইয়ের বুকের তাজা রক্ত-
মায়ের বোবা ভাষা।
স্বাধীনতা মানে যুবতী স্ত্রীর
চোখে লোনা জল,
স্বামীর কোমল ভালবাসা-
দৃঢ় মনোবল।
স্বাধীনতা মানে স্বচ্ছ দীঘির
জলে দূরন্ত সাঁতার,
উদাসী দখিনা পবন-
হিল্লোল কচি পাতার।
স্বাধীনতা মানে মাঝির
ভাটিয়ালী গান,হাতের বৈঠা;
আর ইচ্ছমতো সোনালী স্বপ্নে
আনন্দে মেতে ওঠা।
১৫) বিজয় মাস
কবি- নাহিদা আক্তার রুনা
সকালটা আজ কেমন যেনো
আলোয় আলোয় ভরা,
কী যেনো কী ডেকে গেলো
দোয়েল হরকরা।
নদীর বুকে আলোর নাচন
ঝিলিমিলি ঢেউ,
ওপারেতে বাঁশির সুরে
পাগল বেনেবৌ।
আকাশ রাঙে লালে নীলে
বাতাস মাতে সুরে,
শিশির ভেজা গোলাপ গায়ে
প্রজাপতি উড়ে।
আহা! কিসের যেনো মাতামাতি
কেমন ভালোলাগা,
মনে হলো শেষ যেনো আজ
করুণ রাত্রি জাগা।
শেষ যেনো আজ বিষাদগীতি
নয়নজলের মেলা,
স্বাধীনতা পাবার তরে
রক্তদানের খেলা।
আজ এলোযে পরাণ জুড়ে
মুক্ত হওয়ার আশ,
রক্তরাঙা টগবগে লাল
দীপ্ত বিজয়মাস।
বাংলার মাটি
__সুরাইয়া আক্তার
লিখবো আজ উন্মাদনার শব্দগুচ্ছ রক্তাক্ত বাংলার কথা,স্বাধীনতার কথা,অনাগত শিশু আর শেষ বিকেলের কথা!!
শিশির রাতে অশরীরী ছায়া কড়ানারে নিঃশব্দ রাতে,
কাশবনে কংকালের হাটবসে খুঁজে বেড়ায় নিরাপদ রাস্তা,
উতপ্ত দেহে উত্তেজনারা সংগম করে যখন তখন রক্তমাংস ছিঁড়ে খাবে বলে!
স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনবে বলে তারা আজ অন্ধকারাগারে,
স্রোতস্বিনীতে ভেসে আসে অধগলিত লাশ,
ভেজা শরীরে কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে মিছিলে ভিজে একাকার!
রক্তাক্ত রাজপথে কেবলি নীরবতা আঁকড়ে থাকা কষ্ট,
নোওজোয়ানের কন্ঠে প্রতিবাদী মিছিল!
মাঝেমাঝে চিৎকার করে উঠি বাংলার মাটিতে স্বাধীন বাংলার প্রতিদ্ধনি উঠুক!
আমি আমার কথা বলতে চাই
__মুতাকাব্বির মাসুদ
শাহবাগের মোড়ে প্রথম দেখা
সেদিন বিকেলে টি এস সির উঠোনে
নান্দনিক তারুণ্যের ভিড়ে তুমি
আমি তোমায় দেখেছি;তুমি জানলে না
আবারো দেখা নাট্যসন্ধ্যায়
গাইড হাউসের প্রজাপতি লনে
লালটিপ কপালে,সবুজ কামিজে
এমোন তারুণ্যের উচ্ছ্বাস ভরা বিকেলে
চোখে পড়ো কেনো?
এবার বয়স তিরিশের কথা বলে দেবো আমি
তুমি তরুণ সন্ধ্যার মেরুন চাদরে
অচঞ্চল উদাস
মনে হলো বীরাঙ্গনা চাদরে
'কোকিলারা' তুমি উদ্দাম উচ্ছল
আবার কিছুটা অচপল,স্থির
যেনো 'শবমেহের'
আমি পদাতিক আরণ্যক
বুকের ভেতর ডিনামাইট, উড়িয়ে দেবো
নির্বাক দেয়াল
আমি আমার কথা বলতে চাই
খেয়াল করোনি তুমি
জয়বাংলা রক্ত শিরায় শিরায়
টগবগিয়ে ওঠে
আমার প্রেমের বিদ্রোহী সূর্য উঠবেই
তোমার কালোশশী চুলের ফাঁকে
মাথার উপর মেধাবী কাক
টেলিফোনের তারে
শব্দ শুনে চোখ তুলে তাকালে এই প্রথম
বুঝিনি কাকে দেখলে তুমি!
কাক নকি আমি?
আমি দেখেছি দীর্ঘ নয়মাস পর
তোমার আনত সলাজ চোখে
আমার সোনার বাংলা
দেখেছি ধানশালিকের মুক্ত স্বাধীন উড়াল
বাচ্চা শিশুর নাটাই হাতে উড়াল ঘুড়ির ছন্দ
দেখেছি সুন্দরবনের মায়া হরিণের নৃত্য
দেখেছি আমার প্রেমের রাজপথ
মিছিলে মিছিলে মুখরিত
সবুজ কলাপাতায় রক্তসিঁদুরের ফোঁটা
রেখেছো উঁচিয়ে লাখো জনতার ভিড়ে
পদ্মা,মেঘনা,যমুনার তীরে
তোমার চোখেই দেখেছিলাম
সাম্রাজ্যবাদের কবর
খোঁজেছিলাম আমার স্বাধীনতা
কথা বললেনা একবারো!
বারুদের গন্ধে তোমার শরীরের গন্ধ খুঁজি
কাক দু'টো উড়াল খেলে
জমির আলির বাঁশঝাড়ে।
তোমার জন্য ঢাকায় ফেরা
বেইলি রোড, ফাস্টফুডের দোকান
তোমার খোঁপায় বেলিফুল
সাপুড়ে সন্ধ্যা, ভালবাসার উঁচু দালান
তোমার পাশে সোনালি কবিতার ভিড়
মাঝে মাঝে সবাক তারুণ্যের ঠোঁটে
মেধাবী সিগারেট
তুমি কালোতিষিচুলে শ্যাম্পু করা
ঠোঁটে লাল চন্দনীর হাওয়া
নিয়নের আলোয় ঝলমলে চোখ
দিনের শেষে ক্লান্ত ময়ূরী তুমি
সমসার রুগ্ন কোণে বিলাসী চুম্বন
পটেটো চিপসের মর্মরে ঠোঁট
গোলাপি লিপস্টিকের আহ্লাদী ছোঁয়া
ঘাই খেলে আমার বয়সের রক্তজলে
জলকমলের মতো দেবকন্যা তুমি
সাদা জলের নূপুর পায়
আমার অন্তর দেহুড়ীতে রেখেছো পা
আমার ভেতর যে বিষুববৃত্ত
তোমার দূরত্ব আপাত কমেনি কিছু
তবুও অন্তরগহনে ভিসুুবিয়াসের দহনজ্বালা
আমি তন্ময়, আমি নির্বাক
চেয়ে দেখি কফি মগের সাম্রাজ্যবাদী ঠোঁটে
তোমার নবীন গণতান্ত্রিক চুম্বন
আড়মোড়া ভেঙ্গে ময়ূরী ঢঙ্গে যাচ্ছো তুমি
তখনো কিছুই হয়নি বলা!
আমি নির্বাক, আমি স্তব্ধ অরণ্য
একাকী দাঁড়িয়ে...
বেইলি রোডে, গলির ধারে
মাথার উপর মেধাবী কাক
তখনো টেলিফোনের তারে
সেদিনের পর আজও খুঁজি তোমায়
দূরে কোথাও...
শহর থেকে গ্রামে, উজান গাঙ্গে
ভাওয়াইয়ার সুরে
চাঁদনি রাতে কদমের তলে
আজ ছেচল্লিশ বছর পর
আমার বয়সের ঘরে তোমার ছবি
মন চায় যখন খুলে দেখি
সেই তুমি বনফুলের নাকফুল
ঠোঁটের ভাঁজে নবান্নের হাসি
সবুজ ধানের ডগার মতো চিত্রার্পিত দেহ
সারা দেহে পদ্মার ঢেউ
ইলশে ঠোঁটের মায়া খেলে
তোমার ঠোঁটের বাঁকে
তুমি কী কখনো পড়েছিলে প্রেমে?
১৮) বিজয় নিশান
কবি- শফিকুল ইসলাম সোহাগ
আজ ওড়াবো নতুন দিনে
লাল সবুজের শান,
ক্লিষ্ট জরা দুঃখ ব্যাথা
করবো অবসান।
রাজ পথে আজ স্লোগান হবে
কণ্ঠে মাখা সুর,
জীবন পথে আধাঁর কেটে
আসবে নতুন ভোর।
আলোর মিছিল যাবো গো মা
আমায় সাজাই দাও,
ছাড়বো আমি ঝড় তান্ডবে
পাল তোলা ঐ নাও।
যখন আমি দেখবো স্বদেশ
ঝড়ের পূর্বাভাস,
সুখের হাসি আনবো নীড়ে
ছিন্ন করে ত্রাস।
আজ নেই কোনো অসুরের উপাসনা
আজ আমাদের কাঁধে কাঁধ,-- হাতে হাত
আজ আমাদের আলোকের শামিয়ানা।
আজ আমাদের ভালোবাসা-- লাল ঘুড়ি
আজ আমাদের অভিমান--- নীলাকাশ
আজ তুমি আমি এই বসি---এই উড়ি
আজ আমাদের স্বাধীনতায় বসবাস।
আজ আমাদের ভুলে গেলে চলবে না----
আজ আমরা যেখানে সবাই দাঁড়িয়ে
যে-ভিত কোনো ঝাঁকুনিতে টলবে না
সে-ভিত রচনা হাজারো জীবন হারিয়ে।
আজ তাই ভাবো--- কারা ছিল কান্ডারী
আজ ভেবে দেখো--- কত ছিল সেই ভার
আজ খুঁজে দ্যাখো-- কারা বেঁধেছিল আড়ি
আজ জেনে নাও--- কারা টেনেছিল দাঁড়।
আজ গাছে গাছে ফুল ফোটানোর ধুম
আজ মাঠে মাঠে ফসল ফলানো গান
আজ ঘরে ঘরে একমুঠো ভাত-ঘুম
আজ মোড়ে মোড়ে জেগে থাকা অবিরাম।
আজ আমাদের কাঁধে কাঁধ,-- হাতে হাত
আজ আমাদের আলোকের শামিয়ানা।
আজ আমাদের ভালোবাসা-- লাল ঘুড়ি
আজ আমাদের অভিমান--- নীলাকাশ
আজ তুমি আমি এই বসি---এই উড়ি
আজ আমাদের স্বাধীনতায় বসবাস।
আজ আমাদের ভুলে গেলে চলবে না----
আজ আমরা যেখানে সবাই দাঁড়িয়ে
যে-ভিত কোনো ঝাঁকুনিতে টলবে না
সে-ভিত রচনা হাজারো জীবন হারিয়ে।
আজ তাই ভাবো--- কারা ছিল কান্ডারী
আজ ভেবে দেখো--- কত ছিল সেই ভার
আজ খুঁজে দ্যাখো-- কারা বেঁধেছিল আড়ি
আজ জেনে নাও--- কারা টেনেছিল দাঁড়।
আজ গাছে গাছে ফুল ফোটানোর ধুম
আজ মাঠে মাঠে ফসল ফলানো গান
আজ ঘরে ঘরে একমুঠো ভাত-ঘুম
আজ মোড়ে মোড়ে জেগে থাকা অবিরাম।
পতাকা
__মোসাঃ সামিমা বেগম
স্বাধীনতার মান
রাখবে অর্নিবাণ।
পতাকা এঁকেছে,
নিপুন হাতে;
লাল বৃত্ত
সবুজের মাঝে
চার বছরের শ্রাবন।
বাংলাদেশ গড়বে,
দৃঢ় শপথ নিবে,
পতাকার মান রাখবে
চির অম্লান।
নিপুন হাতে;
লাল বৃত্ত
সবুজের মাঝে
চার বছরের শ্রাবন।
বাংলাদেশ গড়বে,
দৃঢ় শপথ নিবে,
পতাকার মান রাখবে
চির অম্লান।
0 Comments