__কামরান চৌধুরী
বিজয় দেখেছি ভোরের আলো মাটি ছোঁয়ার সুগন্ধে
আজান কিংবা শঙ্খ ধ্বনিতে, নীরব প্রার্থনা সঙ্গীতে
বিজয় দেখেছি শহরে গ্রামে, পথে প্রান্তরে রেস্তোরাতে
লাউয়ের ডগায়, আমলকী বন, বাঁশঝাড়ে শর্ষেক্ষেতে।
বিজয় দেখেছি চঞ্চল শিশুর হাত-পা ছোড়ার ছন্দে
বিজয় দেখেছি দুরন্ত কিশোরের মহা মুক্তির আনন্দে।
বিজয় দেখেছি যুবক-যুবতির প্রণয় উচ্ছ্বল দেহমনে
বিজয় দেখেছি বাবা-মার মমতাময় বাহুতে গৃহকোণে।
বিজয় দেখেছি ফসলের মাঠে হাতেহাতে কাস্তে লাঙলে
বিজয় দেখেছি ভরা নদীর জোয়ার ভাটার ছন্দ তালে।
বিজয় দেখেছি নৌকার ধূসর পালে দিগন্তের আভায়
বিজয় দেখেছি অরণ্য কাননে পাখিদের কলতান সভায়।
বিজয় দেখেছি সবুজে লালে, পতাকায় উর্দ্ধ শিরে,
বিজয় দেখেছি নেতার মুখে, কী অদ্ভূত অহংকারে।
বিজয় দেখেছি প্রিয় চোখের হাসিতে উজ্জ্বল মণিতে
নদীর বুকেতে আঁকা আকাশ মেঘের আল্পনা তুলিতে।
বিজয় দেখেছি অনাহার ক্লিষ্ট মুখের অলিতে গলিতে
শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা, শরত-হেমন্তে, মধু বসন্ত সমীরণে,
বিজয় দেখেছি মিছিলে স্লোগানে রাজপথে পায়েপায়ে,
বিজয় দেখেছি মৌনতায় সন্ধ্যারাতে শিউলিপ্রাতে।
বিজয় দেখেছি গৃহে, শিক্ষালয়ে, কর্মালয়ে, ধর্মালয়ে
হাসিখুশি প্রাণে অনন্ত গানে, দুরন্ত নৃত্য বানে।
বিজয় দেখেছি মায়ের আঁচলে, গায়ের বধুর নোলকে
আলতা পায়ে মেহেদী রাঙা হাতে, নববধুর সাজে।
বিজয় দেখেছি দুঃখিনীর নয়নের জলে, দীর্ঘশ্বাসে
বিজয় দেখেছি এই বাংলার ধুলি, জলে, শ্বাস-প্রশ্বাসে।
বারবার যেন বিজয়ী হয়েই ফিরে আসি এইখানে
অমৃতের স্বাদ নিতে, প্রিয়তমার বাহুতে আলিঙ্গনে।
0 Comments